সাইট্টা বট গাছ (ধামরাই)

Saitta Banyan Tree, সাইট্টা বট গাছ

Saitta Banyan Tree, সাইট্টা বট গাছ

Saitta Banyan Tree, সাইট্টা বট গাছ


সে অনেক দিন আগের কথা, আজ থেকে ৫০০ বছর আগে ধামরাই উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের সাইট্টা গ্রামে দেবীদাস বংশের পূর্বপুরুষ তাদের জমির ওপর একটি বট ও একটি পাকুড় গাছ রোপণ করেছিলেন। তৎকালীন সময়ের সনাতন ধর্ম বিশ্বাস অনুসারে বটগাছকে মহিলা আর পাকুড়-গাছ পুরুষ ধরা হত।
সেই সময়ে এরকম ধর্মীয় অনুভূতিতে দাসবংশের পূর্বপুরুষ ঢাকঢোল, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে বিবাহের উপকরণসহ ব্রাহ্মণ দ্বারা বৈদিক মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে বট ও পাকুড় গাছের বিবাহ সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি বহু লোকের খাবারেরও আয়োজন করেছিলেন তারা। তাই স্বাভাবিকভাবেই স্থানীয়রা এই বৃক্ষ-দ্বয়কে স্বামী-স্ত্রী বলে অভিহিত করেন।

লোকমুখে জানা যায় যে, একবার এই বট-পাকুড়-গাছের নিচ দিয়ে ইট-ভর্তি একটি ট্রাক যাওয়ার সময় গাছের ডালের সঙ্গে আটকে যায়। এসময় ওই ট্রাক-চালক বটগাছের ডালটি কাটলে তিনি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে প্রবীণ ব্যক্তিদের পরামর্শে বটগাছের নিচে কয়েক কেজি বাতাসা আর মোমবাতি দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলে ট্রাক-চালক সুস্থ হন।

এছাড়াও কার্তিক সরকার নামে এক কৃষকের জমিতে বটগাছের ডাল ছড়িয়ে পড়লে তিনি ডালটি কেটে দেন, এরপরও ঘটে একই ঘটনা। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ওই বটগাছের নিচে একটি মন্দির নির্মাণ করে সেখানে পূজা-অর্চনা করতে থাকেন। এ রকমই অনেক অলৌকিক ঘটনা রয়েছে এই বট-পাকুড়-গাছ নিয়ে। এরপর থেকে ভয়ে এলাকার আর কেউ ওই গাছের ডালপালা কাটেনি। ফলে গাছ দুটি বর্তমানে অসংখ্য ডালের মাধ্যমে অসংখ্য শিকড় ছেড়ে দিয়ে ৫ বিঘা জমি দখল করে আছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বিশ্বাস করেন এই গাছ দুটি তাদের দেবতা। তাই তারা বটগাছটির নিচে কালীমন্দির নির্মাণ করে সেখানে কালী, সরস্বতী, বুড়ির পূজা এবং দশমী ও বাসন্তী মেলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে থাকে। নানা অসুখ-বিসুখে মানত করছেন সুস্থতার জন্য আর সফলতার গল্পও অনেক।

স্থানীয় পরিবেশ খুবই সুন্দর। সত্যিকারের গ্রামীণ রূপবৈচিত্র চোখে পড়বে এ গ্রামের আনাচে কানাচে। আধুনিকতা বলতে পিচ ঢালা পাকা রাস্তা। তার দুইপাশে চিরায়ত গ্রাম, ধান-গম-ভুট্টা-আখ প্রভৃতির ক্ষেত, রয়েছে প্রচুর লেবু ও কলার বাগান। স্থানটি ক্যাম্পিং করার জন্য বেশ উপযুক্ত। খাদ্য-পানির সংস্থান করা যাবে অনায়াসে। গোসলের জন্য রয়েছে অনেক পুকুর, বট-পাকুড়ের সুশীতল ছায়ার নিরিবিলি পরিবেশে, পাখ-পাখালির ডাক শুনে অনেকটা সময় নিশ্চিন্তে পার করা যাবে।

অবস্থানঃ

সাইট্টা বট গাছের জিপিএস ট্রেইল 

কিভাবে যাওয়া যায়ঃ

ঢাকা থেকে প্রথমে যেতে হবে নবীনগর। নবীনগর থেকে এই স্থানের দূরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার। ভাড়া ৪০-৫০ টাকা।
সাইট্টা বট গাছ (ধামরাই) সাইট্টা বট গাছ (ধামরাই) Reviewed by DhamraiBD on Monday, February 10, 2020 Rating: 5

No comments:

Litecoin Miner - Mine and Earn free Litecoin
Powered by Blogger.